html

Saturday 28 July 2018

কৌশিক সেন

নায়াগ্রা

কৌশিক সেন


তুমি যেদিন ঝরে পড়েছিলে
আমি তখন সবে ঘুম থেকে উঠেছি।
ওয়াশ বেসিনের আঁজলা ভর্তি জল
চোখে ঝাপটা দিলো আমার,
মুছে নিলো চোখের পাতায় লেগে থাকা
রাতভর লালিত স্বপ্নঘোর।
ঘুম এলো না আর।

আমার চোখে জাগল জল তরঙ্গের মূর্ছনা,
অঝোর ধারায় ঝরে পড়লো
চোখ থেকে চোখে, অন্য চোখে
অন্য অন্য চোখে।
আমার ওয়াশ বেসিন উপচে পড়লো
সুপ্রাচীন জলপ্রপাত হয়ে।।



বসুন্ধরা


সাইকেলটাকে রস্সি দিয়ে
কষে বাঁধা ছিল
এক্সপ্রেস ট্রেনের জানলায়,
ভেজা তোয়ালেটা
কখন শুকিয়ে গিয়েছিলো
চলমান জানলার হাওয়ায়।
শুকিয়ে গিয়েছিলো
পাঁচ মাসের পোয়াতি
দেহাতি আওরাতের আঁশু,
দুই বছরের পেটফোলা ছুটকির
নাকের নীচে সিকনির ধারাও
আজ শুকিয়ে কাঠ,
যেভাবে শুকিয়ে যায়
গাঁও ভর ফেলে আসা জমিন
জমিনে ফেলে আসা
সওদা না হওয়া
আনাজ-সব্জির ঢের।
এক্সপ্রেস ট্রেনে
আজ সুখা রোটির মহেক।
এক্সপ্রেস ট্রেনের সওয়ারীরা
তাই খুদখুশি করেনা কোনোদিন।

সিটি সেন্টার থেকে
হাইওয়ের ফ্লাইওভার ডানা গজায়,
মেশে ওই অ-নেক দূরে
ঝাঁ চকচকে বাইপাসে।
ত্রিফলা নিওন লাইটে উজ্জ্বল
ফোর লেন বাইপাসের ডিভাইডার।
বাইপাসটা আসলে
এক্সপ্রেসওয়ে আর হাইওয়ের কানেক্টর,
রাস্তার দুধারে সুসজ্জিত মাল্টিস্টোরেড –
এখন আন্ডার কনস্ট্রাকশান।
হাইওয়ে দিয়ে গাড়ি যাবার সময়
নাক চেপে ধরে
রইস আদমিরা।
বহুত বদবু আসে
পাকা সড়কের কিনারায়।
কারা যেন কাকভোরে চলে আসে,
সকালের কাম সারে,
চুপিসারে
বাইপাসের ধার ঘেঁষে।

দুই বছরের ছুটকি
আড়াই বছরে মা হয়ে যায়,
ছোট ভাইয়াকে পাহারা দিতে হয়
ফাটা পলিথিনের ছাউনিতে।
দেহাতি মেয়েটা মজুর খাটে
হাইরাইজের সাইটে,
রাজমিস্ত্রির জোগালদার ওর আদমিটা।
সূর্য ডুবতেই
সাইকেলে ফিরে যাবে ওরা।
ছুটকি বসে সাইকেলের সামনে
পিছনের ক্যারিয়ারে
কোলে বাচ্চা নিয়ে
দেহাতি আওরাত।

এক্সপ্রেস ট্রেনের গতিতে
ফ্লাইওভারের নীচে ছুটে চলে
সন্ধের সাইকেল।
সাইকেল সওয়ারিরা
খুদখুশি করে না কোনোদিন।।


No comments:

Post a Comment

Facebook Comments